Last Updated on November 11, 2021 by SM Toukir Ahmmed
মিয়্যানমারের সাথে সক্ষমতা অনুযায়ী সীমান্ত এলাকায় নিরাপত্তা জোরদার করা উচিত। নিরাপত্তা এমন মাজবুত হতে হবে যাতে করে যে কেউ চাইলেও বাংলাদেশে অনুপ্রবেশ করতে না পারে। এমনকি একবারে অনেক মানুষ চাইলেও সহজে সীমান্ত দিয়ে বাংলাদেশে অনুপ্রবেশ করতে না পারে এমন পরিকল্পনা গ্রহণ করা আবশ্যক। ২০১৭ সাল পর্যন্ত রোহিঙ্গারা যেভাবে সীমান্ত দিয়ে বাংলাদেশে অনুপ্রবেশ করেছেন তার অন্যতম কারণ হলো বাংলাদেশের দুর্বল সীমান্ত। কাঁটাতারের বেড়া, দেয়াল নির্মাণ অথবা এজাতীয় পদ্ধতির মাধ্যমে নিরাপত্তা জোরদার করা বাংলাদেশের জন্য আবশ্যক। আর এই নিরাপত্তার বেষ্টনী হতে হবে কয়েক ধাপের বাংলাদেশ আর্মড ফোর্সেস এর সাথে আলোচনার মাধ্যমে।
বিশেষ করে যে নির্দিষ্ট সীমান্ত পয়েন্টগুলো দিয়ে মিয়্যানমার থেকে রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীর বাংলাদেশে অনুপ্রবেশ করার সম্ভাবনা রয়েছে সেই পয়েন্টগুলোর নিরাপত্তা যতোটা সম্ভব ততোটা মাজবুত করা হলে বাংলাদেশের সক্ষমতা অনেকাংশে বৃদ্ধি পাবে। কঠোর সীমান্ত নিরাপত্তা বাস্তবায়ন ছাড়া মানুষের ঢল রুখে দেওয়া প্রায় অসম্ভব। কারণ আর্মড ফোর্সেসের কাছের বন্দুক তারা বাংলাদেশে আশ্রয় চাইতে আশা কোনো জনগোষ্ঠীর উপর চালাতে পারবেনা; এটা অন্যায়ও। অনেক মানুষের ঢল সামাল দিতে পারে শক্ত বেষ্টনী, দেয়াল, শক্ত কাটাতারের বেড়া ও এজাতীয় জিনিস।
দুর্বল সীমান্তের সুযোগ মিয়্যানমার অনেকবার নিয়েছে, এবার যেনো আর সুযোগ না নিতে পারে তার প্রস্তুতি এখনি নিতে হবে। আবার ভারতের পক্ষ থেকেও এমন ধরনের বাধ্য হয়ে আশ্রয় চাইতে আশা জনগোষ্ঠীকে সামাল দেওয়ার জন্য ভারতের সাথে বাংলাদেশের সীমান্তের নিরাপত্তাও জোরদার করা আবশ্যক। যেহেতু ভারতের পক্ষ থেকে এমন আশংকার আভাস পাওয়া যাচ্ছে সেহেতু বাংলাদেশের উচিত এব্যাপারে আগাম সতর্ক থাকা এবং সতর্কতামূলক পদক্ষেপ গ্রহণ করা। উলঙ্গ সীমান্ত থাকলে মানুষ প্রবেশের চেষ্টা করবেই।
বাংলাদেশের সরকার যদি চায় রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসন সঠিক ভাবে সফল হোক তাহলে সরকারের উচিত সীমান্ত এলাকায় নিরাপত্তার উপর গুরুত্ব দেওয়া। সুরক্ষিত সীমান্ত ছাড়া বাংলাদেশের নিরাপত্তা আশা করা অনেকটা দুঃখজনক। যতোদিন সীমান্ত শক্ত না হবে ততোদিন পর্যন্ত ভারত বা মিয়্যানমারের সবাই তাদের কিছু আমজনতাদের বাংলাদেশে প্রবেশের চেষ্টা করেই যাবে “খুচরা” প্রভাব বিস্তারের জন্য অথবা ঝেড়ে ফেলার জন্য। বাংলাদেশ আর্মড ফোর্সেস অন্যদেশের আমজনতাদের উপর বন্দুকের গুলি ব্যবহার করতে পারবেনা কিন্তু কাটাতারের বেড়া, দেয়াল ইত্যাদি জিনিস গুলির চেয়েও কার্যকারি ভূমিকা পালন করবে।
মিয়্যানমার তাদের সীমান্ত দিয়ে বাংলাদেশে রোহিঙ্গা প্রবেশের জন্য রোহিঙ্গাদের উপর চাপ প্রয়োগ করতেই থাকবে। আর এই চাপে পরে রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠী বাংলাদেশে প্রবেশের চেষ্টা করতেই থাকবে। যদি কঠোর নিরাপত্তা থাকে বাংলাদেশের সীমান্তে তাহলে সহজে এতো লাখ লাখ মানুষ বাংলাদেশে অনুপ্রবেশ করতে পারবেনা। এই কঠোর নিরাপত্তা মানে নয় শুধুমাত্র ট্যাংক, অস্ত্র, গোলা বারুদ। এই কঠোর নিরাপত্তার মানে হলো আমজনতাদের ঢলের অনুপ্রবেশ রুখে দেয়ার জন্য কার্যকারি বেড়া, দেয়াল। ট্যাংক মোতায়েন করেও আমজনতাদের ঢল রুখে দেওয়া বাংলাদেশ আর্মড ফোর্সেসের পক্ষে সম্ভব না। কারণ তারা তা প্রয়োগ করবেনা তা রোহিঙ্গারা জানেন। অথচ কাটাঁতারের বেড়া, দেয়ালই পারবে লাখে লাখে প্রবেশা বাধা দিতে। খোলামেলা সীমান্ত অবস্থায় রোহিঙ্গাদের মতো জনগোষ্ঠীকে প্রবেশে প্রতিরোধে ব্যর্থতার জন্য ভবিষ্যতে সেনাবাহিনী, বিজিবি কাউকে দোষারোপ করা যাবেনা। কারণ তত্ত্বীয়ভাবে ও বাস্তবতার আলোকে তাদের এখানে কিছু করার নেই। তাই ভিন্ন কৌশল অবলম্বন করতে হবে কাটাঁতারের বেড়া নির্মাণের মাধ্যমে। বাংলাদেশের সীমান্ত এতো দুর্বল হওয়া বাংলাদেশের কারোর জন্য কাম্য নয়। যদি পরাশক্তিগুলোর চাপে পরে রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীকে বা অন্য জনগোষ্ঠীকে অনুপ্রবেশ করার সুযোগ দিতেও হয় তবুও তার পরিমাণ লাখ ছাড়াবেনা। কয়েক হাজার “রুপক ভাবে” আশ্রয় দেওয়া যাবে। এতে করে বাংলাদেশের অভ্যন্তরীণ নিরাপত্তা হুমকিতেও পরবেনা। একবার আমজনতা সীমান্ত পার করে কোনো দেশে অনুপ্রবেশ করে ফেললে তা সামাল দেওয়া যায়না। অনেক দেশের চোখেও পড়েনা, আবার নিশ্চুপ সমর্থন আদায় করা সহজ হয়।
মনস্তাত্ত্বিকভাবে এখন থেকে বাংলাদেশে আশ্রিত রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীদের তাদের দেশের শিক্ষা দিতে হবে। এর পিছনে বাংলাদেশের নিজেরই অর্থ বিনিয়োগ করতে হবে। তাদেরকে বোঝাতে হবে বাংলাদেশ তাদের দেশ না, তাদের দেশ মিয়্যানমার। তাদের ইতিহাস, তাদের সোনালী দিন, ভাষা ইত্যাদি জিনিস তাদেরকে এখন থেকেই শিক্ষা দিতে হবে। তারা যদি এভাবে একেবারে সবদিক দিয়ে বিচ্ছিন্ন থাকে তাহলে তাদের “মগজে” মিয়্যানমার শব্দটি থাকবেনা, একেবারে মুছে যাবে। আর এই মুছে যাওয়াই খারাপ। বিশেষ করে তাদের যে শিশু থেকে তরুণ জনগোষ্ঠী বাংলাদেশে বড় হচ্ছে তাদের মগজে “সুশিক্ষা” দেওয়া আবশ্যক। যদি বাংলাদেশ তাদের প্রত্যাবাসনে সফলও হয় তাহলেও তারা পুনরায় বাংলাদেশে অনুপ্রবেশ করার চেষ্টা করবে ভয়ে অথবা জয়ে। একবার যদি আবার অনুপ্রবেশ করতে পারে তাহলে বেশিরভাগ দেশই মনে করবে রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠী বাংলাদেশের সাথে কানেক্টিড।
এর খেকে পরিত্রাণের অন্যতম উপায় হলো কঠোর-শক্ত কাটাতারের বেড়া, সেই দেয়াল যেই দেয়ালের ভিতরে রডের বদলে বাঁশ থাকবেনা, হালকা নাড়াচাড়ায় নুয়ে পড়েনা। যদি কনক্রিটের ওয়াল ভালো হয় তাহলে সেটাই করা উচিত সক্ষমতা অনুযায়ী বিশেষজ্ঞদের পরামর্শের ভিত্তিতে।
রোহিঙ্গাদের কানভিন্স করা যে, বাংলাদেশ তাদের দেশনা, আমরা তাদের সম্মান করি আর এই সম্মান যাতে করে টিকে থাকে তাদের নিজেদের মাটিতে সেই উদ্যোগ বাংলাদেশ নিতে আগ্রহী। তারা বাংলাদেশের কাছে কোনো কিছুর দাবি করলেও সেখানে মিয়্যানমারকে সামনে নিয়ে আসার চেষ্টা করতে হবে। তাদের সমস্যা, দুঃখ-কষ্ট এর দায় বাংলাদেশের না বরং মিয়্যানমারের। বাংলাদেশ যা করছে তা অনেক বেশিই করছে, তারা যেনো শুধু বাংলাদেশের কাছে না চায় তবে তাদের চাওয়ার মাধ্যম বাংলাদেশ হলে তাতে বাংলাদেশের আপত্তি নেই। এভাবে চলতে থাকলে তারা বাংলাদেশকেই তাদের দেশ হিসেবে বিবেচনা করবে। আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমের সাথে যোগাযোগ বৃদ্ধি করতে হবে। তাদেরকে কানভিন্স করতে হবে তারা যেনো শুধু ভাসানচর নিয়ে খবর প্রচার না করে, মিয়্যানমারের অত্যাচারে রোহিঙ্গাদের আজ এই দুরবস্থা এই চিত্রও যেনো তুলে ধরে। যেহেতু ভ্যাক্সিন কাযর্ক্রম চলমান রোহিঙ্গা শিবিরে তাই তাদেরকে বোঝানোর মোক্ষম সময় এখনি হতে পারে। যেহেতু এখন বাংলাদেশে কোভিড-১৯ বিদ্যমান সেহেতু কোনো প্রকার কর্মসূচীর কারণে কারৌনাকালীন পরিস্থিতি ভয়ানক রূপ নিতে না পারে সেদিকে লক্ষ রাখা অত্যাধিক আবশ্যক।
এর পাশাপাশি বাংলাদেশ থেকেও আমজনতাদের অংশগ্রহণের মাধ্যমে শান্তিপূর্ণ আন্দোলন করা আবশ্যক, যাতে করে বিশ্ব মিডিয়ার নজর রোহিঙ্গা সমস্যার উপর পড়ে। এজন্য দলীয়ভাবেও শান্তিপূর্ণ আন্দোলন করা উচিত। রোহিঙ্গা ক্যাম্পগুলোর কাছাকাছি পৌস্টার লাগানো উচিত। সচেতনতামূলক পৌস্টার, ব্যানারের মাধ্যমে বিশ্বকে জানাতে হবে। সরকার এবং বাংলাদেশের জনগণ উভয়ের প্রচেষ্টার মাধ্যমে রোহিঙ্গা সমস্যার সমাধান করা আবশ্যক। রোহিঙ্গাদের ফিরিয়ে নিতে হবে, আমরা আমাদের রোহিঙ্গা ভাইদের প্রত্যাবাসন চাই, তাদের জমি ফিরিয়ে দাও মিয়্যানমার, আমাদের রোহিঙ্গা ভাই-বোনদের বাসস্থান ফেরত দিতে হবে মিয়্যানমারকে– এজাতীয় আন্দোলন, স্লৌগান দেওয়া উচিত প্রতিদিন, প্রতিসুপ্তাহে, প্রতিমাসে। গণকর্মসূচী বাস্তবায়ন ছাড়া রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসন বিফল হওয়ার সম্ভাবনা অত্যাধিক। রোহিঙ্গাদের প্রত্যাবাসন প্রচেষ্টা বাংলাদেশের সকল শ্রেণী-পেশার মানুষের অংশগ্রহণ থাকতে হবে যাতে বিশ্ব মিডিয়া এটা ভাবে যে বাংলাদেশের সিংহভাগ জনগণ রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসন চায়, আর বাংলাদেশের জনগণের চাওয়া পূরণে বাংলাদেশ সরকার বদ্ধপরিকর। একতরফাভাবে রোহিঙ্গা সমস্যার সমাধান হবেনা। বাংলাদেশের সমাজকে জাগ্রত হতে হবে রোহিঙ্গাদের পাশে থেকেই, পাশে রেখেই মিয়্যানমারে ফেরত পাঠানোর জন্য। এখানে লক্ষনীয় যে, রোহিঙ্গাদের প্রত্যাবাসনই হলো একমাত্র সমাধান তা প্রচার করতে হবে সকলের কাছে। মিয়্যানমারের কাছে কোনো দাবি না করে বাংলাদেশের সরকারের কাছে কিছু দাবি করার মানেই হচ্ছে বাংলাদেশকে রোহিঙ্গাদের সমস্যা ও শত্রু বানানো এবং প্রবাহ ভিন্ন দিকে নেওয়ার প্রয়াস। বাংলাদেশের ছাত্র সমাজ পূর্বেও বাংলাদেশের সংকটে অগ্রণী ভূমিকা পালন করেছে, এবারো এমন ভূমিকা পালন করবে তাই সকলের কাম্য।
মানসিকভাবে রোহিঙ্গাদের তৈরি করার জন্য বাংলাদেশের সীমান্তে কঠোর নিরাপত্তা প্রয়োগ ও বাস্তবায়ন করা উচিত। কারণ বাংলাদেশ-মিয়্যানমারের সীমান্তে দেয়াল, কাঁটাতারের বেড়া না থাকলে কোনো প্রকার সমস্যার সম্মুখীন হলেই রোহিঙ্গারা মিয়্যানমারের সীমান্ত পারি দিয়ে বাংলাদেশে অনুপ্রবেশ করবে। তাদের কোনো প্রকার বাধার সম্মুখীন হতে হবেনা, সাহায্য পাওয়া যাবে এই আশায় তাড়া কোনো প্রতিবাদই করবেনা। এতে করে রোহিঙ্গাদের মনোবল নষ্ট হয়ে যাবে তাদের উপর নিপীড়নের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করার জন্য। যদি বাংলাদেশের সীমান্ত এমন ঔপেন না হয় তাহলে তাদের মনে একটা পজিটিভ ভয়-সাহস কাজ করবে যে তাদের আর তেমন আশ্রয় নেওয়ার জায়গা নেই, তাই তাদেরকে অবশ্যই মিয়্যানমারের বিরুদ্ধে অভ্যন্তরীণভাবে সচেতনা, শান্তিপূর্ণ প্রতিবাদ করতে হবে, সমাধান না করা ছাড়া উপায় নেই। রোহিঙ্গারা প্রতিবাদ করার সাহস পাবে এবং প্রতিরোধ গড়ে তোলার চেষ্টা করবে।
রোহিঙ্গারা বাংলাদেশে আরো কয়েক বছর থাকলে তাদেরকে বাংলাদেশের সমাজ থেকে আলাদা করা প্রায় অসম্ভব হয়ে যাবে। বিশেষ করে রোহিঙ্গারা ধীরে ধীরে বাংলাদেশের সমাজেরই একটা অংশ মনে করা শুরু করে দিয়েছে। এর উদাহরণ হলো বাংলাদেশ সরকারের কাছে অন্ন, বস্ত্র চাকরির দাবি করা। তারা মিয়্যানমারকে তাদের সমস্যা মনে করছেনা বরং বাংলাদেশকে তাদের সমস্যা মনে করছে। তারা মানসিকভাবে, শারিরীকভাবে ও আর্থিকভাবে অনেক কষ্টে আছে এটা সত্য। কিন্তু তাদের অবস্থার জন্য মিয়্যানমার দায়ী আর বাংলাদেশ এই সমস্যার সমাধান করার চেষ্টা করছে এটা বোঝানো আবশ্যক।
খোলামেলা সীমান্ত থাকলে অন্য রাষ্ট্রগুলো তাদের জনগণকে চাপিয়ে দেওয়ার চেষ্টা করার সাহস পাবেই, করবেই, ভাববেই। তারা জানে বাংলাদেশের সীমান্ত দিয়ে অনেক মানুষকে অনুপ্রবেশ করানো সহজ। আমজনতাদের ঢল সেনাবাহিনী, বিজিবি, বিমানবাহিনী কেউই সামাল দিতে পারবেনা। অর্থাৎ আমজনতাদের ঢল সামাল দেওয়ার জন্য তাদের কিছু করার থাকবেনা। যদি তারা কোনো প্রকার “শক্ত” বিহেইভ করে তাহলে বাংলাদেশের ভাবমূর্তি সারাবিশ্বে ক্ষুন্ন হবে। হাতে অস্ত্র নিয়ে শুধু তাকিয়ে থাকা ছাড়া তাদের কিছুই করার থাকবেনা। কারণ আমজনতা কোনো দেশের আর্মড ফোর্সেসের অংশ নয়। রোহিঙ্গাদের মতো সমস্যা গুলোর প্রাথমিক সমাধান হলো এমন সমস্যার সম্মুখীন না হওয়া। দেয়াল, কাঁটাতারের বেড়াই প্রাথমিকভাবে এমন পরিস্থিতি থেকে বাচিঁয়ে রাখে। আশ্রয়পার্থীদের থেকে পুরোপুরি মুক্ত থাকা প্রায় অসম্ভব কিন্তু আশ্রয়পার্থীর সংখ্যা অবশ্যই এমন লাখে লাখে হবেনা। মহাপরিকল্পনার অংশ হিসেবে বাংলাদেশের এই ব্যাপারে ভেবে দেখা উচিত।
সরকারের উচিত সকল রোহিঙ্গাদের ফিরিয়ে নেওয়ার জন্য চেষ্টা করা। আর তা যদি সম্ভব না হয় তাহলে শুধুমাত্র ভাসানচরের রোহিঙ্গাদের ব্যতীত বাকি রোহিঙ্গাদের তাদের নিজ দেশে ফিরিয়ে নেওয়ার প্রচেষ্টা করা, এমন আরগুমেন্টে আসা, এমন প্রস্তাবে সম্মতি দেওয়া। ভাসানচরের রোহিঙ্গারা হবে “প্রতিকি, রুপক” অর্থে আশ্রয়গ্রহণকারী। যারা বাংলাদেশের নিরাপত্তার জন্য হুমকি হবেনা। এমনটা অনুমেয় যে কিছু সংখ্যক রোহিঙ্গাকে বাংলাদেশে আশ্রয় দিতে হতেই পারে। যদিও এমনটা আশা করা যায় যে, ভাসানচরের রোহিঙ্গাদের আশ্রয়দানের মাধ্যমে বিশ্বকে কিছুটা হলেও কানভিন্স করা যেতে পারে “তাদের” কথা আমরা শুনেছি এবার আমাদের কথাও “তারা” শুনুক। যদিও সরকারের উচিত সকল রোহিঙ্গাদের প্রত্যাবাসনে বদ্ধপরিকর থাকা তবুও প্ল্যান বি হিসেবে শুধুমাত্র ভাসানচরের রোহিঙ্গাদের হাতে রেখে বাকি লাখ লাখ রোহিঙ্গাদের নিজ ভূমিতে ফিরিয়ে নেওয়ার ব্যাপারেও প্রস্তুত থাকা।
নিশ্চয়ই সীমান্তে কয়েক স্তরের কাটাঁতারের বেড়া বা দেয়াল নির্মাণের মাধ্যমে মিয়্যানমার একটা স্পষ্ট বার্তা পাবে। ভারতের সীমান্তে কাটাঁতারের বেড়া নিনর্মাণের ক্ষেত্রে এখনই জোর দেওয়া আবশ্যক। মিয়্যানমারের সীমান্তে এধরনের পদক্ষেপ নেওয়াটা খুবই জরুরী।
রোহিঙ্গা সমস্যা কোনো ভৌট ব্যাংকের চাবি নয়, আর কোনো দল বা অন্য কোনো রাষ্ট্র অথবা সংস্থা যেনো “তালা” খোলার চেষ্টা না করে সে দিকে সকলের নজর রাখা আবশ্যক। বিশেষ করে ছাত্র সমাজকে ভৌটের মূলার জন্য যাতে করে কেউ ব্যবহার করতে না পারে সে দিকে তাদের সজাগ দৃষ্টি রাখা আবশ্যক। রোহিঙ্গা সমস্যা একটা জাতীয় সমস্যা তাই জাতিকেই এর সমাধান করতে হবে, কোনো প্রকার বিভক্তি বাংলাদেশের জন্য কাম্য নয়। বাংলাদেশে কোনো প্রকার অস্থিতিশীলতার সৃষ্টি হোক তাও বাংলাদেশে আশা করেনা।
ভবিষ্যতে এই ধরনের পরিস্থিতি সামাল দেওয়ার জন্য সীমান্ত নিরাপত্তা আরো ডিভালপ করার জন্য সরকারের আলাদা করে বাজেট প্রদান করা উচিত।